প্রত্যয় নিউজডেস্ক: নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘রোহিঙ্গা সংকট : পশ্চিমা, এশীয় এবং দ্বিপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৪ আগস্ট) বেলা ১১টায় অনলাইন মিটিং প্ল্যাটফর্ম জুমে এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) এবং সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে উপস্থিতি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোইট প্রফেন্টেইন, মালয়েশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তান শ্রী দাতো ড. সাঈদ হামিদ আলবার, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং এসআইপিজির সিনিয়র ফেলো রাষ্ট্রদূত শহীদুল হক। আলোচনা সভাটি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জন্যই সমস্যা নয়, এটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিকভাবে একটি বড় উদ্বেগ, যার সমাধান হওয়া দরকার। তিনি বলেন, মিয়ানমারে বসবাসকারী সম্প্রদায়কে বৈষম্যমূলক ও শোষণ বন্ধ করার জন্য আমাদের অবশ্যই মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।
কানাডার হাইকমিশনার বেনোইট প্রফেন্টেইন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকে কানাডিয়ানরা মিয়ানমারে যা ঘটেছে তাতে হতবাক এবং আমরা পুরো সময়জুড়ে দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের পাশে আছি। তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকেই পরিষ্কার বুঝতে পেরেছিলাম, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আমাদের কিছু করতে হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বিশেষ কর্মী নিয়োগ করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কী করা যায় সে বিষয়ে ধারণা পাওয়ার জন্য আমি নিজে মিয়ানমার এবং আরও কিছু দেশ ভ্রমণ করেছি। কানাডার হাইকমিশনার বলেন, আমাদের উভয় দেশের ক্ষেত্রেই মানুষের মানবিক বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে।
তান শ্রী দাতো ড. সাঈদ হামিদ আলবার বলেন, এশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যেখানে বিশ্বের ৬০ ভাগ জনগোষ্ঠী বাস করে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যেই সমস্যা নয়, এটি একটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকটও বটে। রোহিঙ্গা ট্র্যাজেডি কেবল মানবিক সংকটই নয়, এটি সুরক্ষা এবং রাজনৈতিক সমস্যার সঙ্গেও জড়িত। এজন্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। মানবিক লঙ্ঘন ও গণহত্যা বন্ধে আমাদের অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ সময় তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারের আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, এনএসইউ সেসব বিষয়ে গবেষণার ওপর জোর দেয়ার জন্য গর্বিত যা সরকার এবং শিল্পের জন্য নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে সাহায্য করে এবং যার ব্যবহারিক জীবনে প্রভাব রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যে, এই ধরনের সেমিনার এবং এর ফলাফল সরকারকে এই সংকট সমাধানের সিদ্ধান্ত নিতে এবং নীতিমালা তৈরি করতে সহায়তা করবে। এ সময় তিনি এ জাতীয় সেমিনারের আয়োজন ও অংশগ্রহণের জন্য আয়োজক এবং আলোচকদের ধন্যবাদ জানান।
ভার্চুয়াল এ আন্তর্জতিক আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. ইশরাত জাকিয়া সুলতানা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দূতাবাসের প্রতিনিধি, বিদেশি শিক্ষক ও গবেষক উপস্থিত ছিলেন। সিপিএসের সমন্বয়ক ড. এম জসিম উদ্দিন ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মধ্যদিয়ে এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সমাপ্তি ঘোষণা করেন।